Saturday, November 26, 2016

রোহিঙ্গাদের অধিকার ফিরিয়ে দেয়াসহ যাবতীয় সহযোগিতায় এগিয়ে আসতে বিশ্ববাসীর প্রতি আহ্বান


রোহিঙ্গাদের নাগরিক অধিকারসহ খাদ্য, চিকিৎসা, নিরাপদ বাসস্থান, মর্যাদা নিশ্চিত করার জন্য বিশ্ববাসীর প্রতি আহ্বান  জানিয়েছেন আইআইইউসি’র বক্তারা।
আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রামের কালচারাল ক্লাবের আয়োজনে আজ ২৬ নভেম্বর দুপুর ১২ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্ট্রাল লাইব্রেরির সামনে মিয়ানমারে মুসলিম গণহত্যার প্রতিবাদে র‌্যালি ও মানববন্ধনে বক্তারা এ দাবি জানান।
প্রধান অতিথির আইআইইউসি’র প্রক্টর ড.শফিউদ্দীন মাদানী বলেন, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের রোহিঙ্গা মুসলমানদের ওপর শতাব্দীর জঘন্যতম গণহত্যা চলছে। সেখানকার শিশু, নারী, পুরুষদেরকে তাদের বসতবাড়ি থেকে উচ্ছেদ করে গ্রামের পর গ্রাম পুড়িয়ে দেয়া হচ্ছে।
শফিউদ্দীন মাদানী বলেন, আমাদের এই কর্মসূচি তাদের বিরুদ্ধে যারা নিরীহ শিশু, নারীদেরকে ঘরবাড়ি থেকে উচ্ছেদ করছে। তাদেরকে সাগরে-জঙ্গলে বনবাসে পাঠিয়ে পেট্রোল দিয়ে ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দিচ্ছে। রোহিঙ্গাদের ব্যাপারে বিশ্ব নির্বিকার। যেখানে কোন দেশের হাতী খাদে পড়ে গেলে আমাদের টেনশনে ঘুম হয় না, সেখানে হাজার হাজার মানুষকে নির্বিচারে হত্যার পরও বিশ্ব নেতৃবৃন্দ নীরব।
দেশের প্রেসিডেন্ট এবং প্রধানমন্ত্রী মহোদয়ের কাছে আবেদন জানিয়ে বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় ভারত যেভাবে সীমান্ত খুলে দিয়ে এদেশের সর্বস্থরের মানুষের জন্য নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছিলেন, সেভাবে রোহিঙ্গাদের জন্য সীমান্ত খুলে দিয়ে তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করুন।
এছাড়াও তিনি মানবিক দিক বিবেচনা করে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাসহ সকলকে রোহিঙ্গাদের চিকিৎসা, খাবার-দাবারসহ যাবতীয় সাহায্য-সহযোগিতায় এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
সিইএনইউআরসি ডিপার্টমেন্টের হেড ড. মফিজুর রহমান আল আজহারী বলেন, কোথাও যখন একটি কুকুর মারা যায়, তখন বিশ্বের বিভিন্ন সংস্থা তাদের চোখের পানি দিয়ে বুক ভিজিয়ে দেয়। বাক স্বাধীনতার জন্য বিশাল বিশাল সেমিনার, কনফারেন্স হয়; কিন্তু আজকে যখন মিয়ানমারের হাজার হাজার মুসলমান নারী-পুরুষকে নির্যাতন করে ছোট্ট ছোট্ট বাচ্চাদেরকে মায়ের সামনে জবাই করা হচ্ছে তখন তারা চুপ। মা-বাবার সামনে মেয়েদেরকে ধর্ষণ করা হচ্ছে, জীবন্ত মানুষগুলোর গা থেকে চামড়া তুলে নেয়া হচ্ছে তখন বিশ্ব মানবাধিকার সংস্থাগুরো নীরব-নির্বিকার। আমরা তাদের ধিক্কার জানাই।
আল আজহারী মুসলিম বিশ্বের নীরবতায় বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, আজ মুসলিম বিশ্বও নীরব। ৫৭টি মুসলিম রাষ্ট্রও কেন রহস্যজনকভাবে নীরব।
ছাত্র প্রতিনিধি হামেদ হাসান এলাহীর সঞ্চালনায় মানববন্ধনে প্রফেসর ড .নাজমুল হক নদবী, প্রফেসর ড.বি এম মফিজুর রহমান আল আজহারী, প্রফেসর ড. শফি উদ্দীন মাদানী, প্রফেসর এমদাদ হোসেন, প্রফেসর হারুনুর রশীদ, প্রভাষক নিজাম উদ্দীন, প্রভাষক নাজমুস সাকীব, কালচারাল ক্লাবের সভাপতি নূরে আলমসহ পাঁচ শতাধিক অংশগ্রহণ করে।
মানববন্ধনে বক্তারা গণমাধ্যমকর্মীসহ সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে সাধ্যানুযায়ী মিয়ানমারে চলমান হত্যাযজ্ঞের কথা বিশ্ববাসীর কাছে তুলে ধরতে আহ্বান জানান।


No comments:

Post a Comment